সহজ পাঠের পর
উৎসর্গ
তিন বন্ধু
সৌরাষ্ট্র ঘোষ, তন্ময় মণ্ডল ও বুদ্ধদেব হালদারকে
১.
বিরক্ত হওয়ার আগে নিজেকে কেমন লাগে
কেমন লাগে সেলফোনের পাশে উপেক্ষার হৃদস্পন্দন
#
আয়না অনেক কিছুই জানে না, জানার কথাও নয়
কে কিভাবে নিজেকে পুনঃমুদ্রণ করছে
কার তালুতে শিহরিত হচ্ছে হলুদ অন্তর্বাস
#
ভাবনার কোনো স্কিনটোন নেই, প্রতিটা সাইলেন্সের
ভেতর
ছিটকিনি খুলে দেয় উনিশের জলাশয়
#
যতটা বেডরুম স্বপ্নলোকের শূন্য
যতটা দূরত্ব পাগল পাগল
আমার রং চারদেয়ালের ইঙ্গিত
আমার উদ্যেশ্য আত্মগোপন করতে চাওয়া অহঙ্কার
#
স্বপ্নের পাশে খাঁচাটা খুলে গেলেই
আমরা দুজন প্রচন্ড ভাবে পরস্পর বিরোধী
২.
এভাবে নিজের কাছে এসে দাঁড়ালে
এন্টিক লাগে শূন্যের রেসকোর্স
#
তোমার আকর্ষে গলা মেলায় নিঃশব্দ শীৎকার
#
সমস্ত টানাপোড়েন
ঢেউয়ের সহজপাঠ
প্রিয় চরিত্রেরা মুখোমুখি
#
এরপর আর কোনও বিকল্প
হতে পারে না
#
সম্পর্কের বন্দিশে
তোমাকে একটা অসমাপ্ত কক্ষপথ দিয়ে যাবো
৩.
মনখারাপ জুড়ে
একটা বেওয়ারিশ ঘুড়ি
#
নেশাতুর রাতের
চোখে
কয়েক গ্যালন
পঙ্গু সম্পর্ক
ঝিমলাগা
ফুটপাথ তোমার আঁখিপল্লব
শহরের কস্টিউম
ছিঁড়ে, সমস্ত কৈফিয়ত পেরিয়ে
ওভার এন্ড আউট
#
এরপর একটা
নিষ্পাপ সন্ধে
নরম স্পর্শে
চিনে নেবে পুরোনো তোমাকে
কোনও কথা নয়
আলো কুড়িয়ে
অসমাপ্ত মুগ্ধতা
#
আমার আঙুল
এখনও তোমাকে ভুলতে শেখেনি
৪.
হয়ত জনমত অন্য
কথা বলে
বিপন্নতা বোধ
থেকে জন্ম নেয় মাত্রাহীন অন্ধকার
হয়ত এভাবে কেউ
ফিরে আসে না
ছায়ার
মুখোমুখি নিজেই অবিকল
#
এভাবে সমস্ত
অসম্পূর্ণ কবিতা হেঁটে চলে
শূন্যের ভেতর
শূন্যের মহোৎসব
কতটা প্রবাহে
নিজেকে যাচাই করে নেওয়া যায়
অমরত্ব মেখে
আরও উদাসীন পৃথিবী
#
আমি বিষয়ের
মধ্যে খুঁজে দেখি বিষয়হীনতা
তোমার চোখে
অতিলৌকিক ছায়াপথ
জীবন ও
মৃত্যুর মাঝে সেই অনিশ্চিত বেলুন
সাফল্য কি
নিছক দুর্ঘটনা মাত্র?
৫.
কিছুটা
স্নিগ্ধতার জন্য অপেক্ষা করছি
সমস্ত উচ্চারণ
শুষে নিচ্ছে নিজের প্রতিশব্দ
এরপর রাতের
পাতা জুড়ে স্বপ্ন জমা হবে
স্বপ্নের
শরীরে সাদা পায়রার মতো মেঘ
#
প্রতিবার
নিজের থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া মাত্র
নিরুদ্দেশ ভরে
ওঠে পকেটে
কি নিদারুন সে
অস্তিত্ব
ছায়ার ভেতর
একজোড়া অশান্ত প্রজাপতি
#
যতটা
মুহূর্তের মধ্যে জমে থাকে অদৃশ্য জানলাচিহ্ন
যতটা
ভালোবাসার দোহাই দিয়ে নির্ভুল অনুসরণ
ক্রমশ গভীর
থেকে গভীরতর শব্দজাল
আলোর শরীরে
প্রতিস্থাপন করে নিজেকে
#
সম্ভাবনা,
আসলে নিজেকেই খুঁজে পাওয়া
পাশাপাশি
নিকটতম সহজবোধ্য
মিথ
একটা মৃত্যু আসলে
দুটো মানুষের জন্ম দেয়
চোখ থেকে চোখ তুলে
আনে মেধার চামচ
সমস্ত দূরত্ব মুছে
হেঁসে ওঠে জন্মদিন
কোনো কিছুর তোয়াক্কা
না করেই ফানুস উড়িয়েছিলাম আমরা
#
কিছু কথা না বলাই
থেকে গেল
ঘড়ির কাঁটায় জীবনের
ভাবসম্প্রসারণ
অতিরিক্ত শান্ত
পোশাক খুলে রাখে ভেতরের মানুষটাকে
রাতের ফ্রেমে বিষাদ
ভায়োলিন
#
রিয়েলিটির মঞ্চে
দাঁড়িয়ে অন্ধ হয়ে যাচ্ছি আজকাল
আমার জানলায় পোকাদের
গ্রে-ম্যাটার
গ্লাসের কিনারে
কথারা লেগে আছে এখনও
স্নান-খাওয়া ভুলে
না শেষ হওয়া টিফিনবেলা
#
কান্না থামলে সেইতো
শব্দের কাছে ফিরে যেতে হবে
একটা মৃত্যু আসলে
দুটো মানুষের জন্ম দেয়
চিয়ার্স
তোমাকে নিয়ে নির্দিধায় একশোটা বাজি লড়তে
পারি
সমস্ত ব্যথার পাশে ঘোড়ার ক্ষুরের মতো জেগে
থাকে নির্মেদ চাহুনি
যেভাবে প্রশ্রয় বাড়িয়ে দেয় স্নেহশীল হাত
যেভাবে ভালোবাসা লিখে রাখে সবুজ বিস্ময়
এক তুখোড় জাদুকরের মতো তুমি অমোঘ
শুরুয়াতের এপিসেন্টার থেকে লাইফটাইম ওয়ারেন্টি
#
বেশ কয়েক মোলাকাতের পর বুঝেছি
তুমি একটা না শেষ হওয়া গল্পের মতো
কিংবা প্রাত্যহিক মেগাসিরিয়াল
ভালোবাসা বা মন্দবাসা নয়
এক অদ্ভুত আকর্ষণে ছুঁয়ে ফেলি ব্লিঙ্ক করা
সম্পর্কের স্টিয়ারিং
তোমার উপস্থিতি সংজ্ঞাহীন ভালোলাগা, মিলিয়ন
ডলার স্মাইল
সমস্ত মনখারাপ ভুলিয়ে দিতে পারে
#
মিস কলকাতা, এভাবেই জীবনকে চিয়ার্স ছুঁড়ে
দাও
অন্তত আজকে তোমার নাম করে একপেগ চা বেশি
খাবো...
আচ্ছেদিন
ছোটোবেলায় কালো জামা পড়া লোকেদের ভয় পেতাম,
এখন আর পাই না।
যেদিন প্রথম তোমাকে ছুঁয়েছিলাম
সেদিন থেকে পৃথিবীটা আমার কাছে সুন্দর।
#
কোনো পিছুটান নেই। শোকপ্রস্তাব নেই। জন্ম
মৃত্যু জরা কান্না কিচ্ছু নেই
-একটাই মন্ত্র ভালোবাসা
#
ইদানিং টিভির পর্দায় আপনাকে দেখলেই সবকিছু
গুলিয়ে যায়,
গুলিয়ে যায় মুখস্ত করা সংলাপ
ভাইজান,
আমরা গ্রহ নক্ষত্র দেশপ্রেম তারাক্কির আলটিমেট
সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে
খুলে গেছে গণতন্ত্রের শেষ বোতাম...
এর পরেও কি বলবেন সবটাই আতসবাজির খেল,
প্রচণ্ড ভৌতিক!
#
আমরা তো সমঝোতায় ঝুঁকে পড়া কীট
রাত গেয়ি বাত গেয়ি,
তারচেয়ে মিছিলে হাঁটুন, মোমবাতি জ্বালান,
দেয়ালে দেয়ালে কবিতায় ভরে যাক
সাম্রাজ্যবাদ আসলে সেই সফ্টড্রিংকস যাকে
ছাড়া আমাদের সকল মিথ্যে-
ভালোবাসা মিথ্যে, চুমু মিথ্যে, যৌনতা মিথ্যে,
প্রতিবাদ মিথ্যে
#
আসুন মহাপ্রভু আমরা সকলে সাদা জামা গায়ে
দিই
যে জামার কলারে হেসে উঠবে অদৃশ্য ডেভিল
এত সহজে কি সুন্দরের ডেফিনেশান বদলানো যায়?
#
চিয়ার্স মাই ডিয়ার
ঈশ্বর একই আছেন, সিলেবাস বদলে গেছে মাত্র
বুলেট
(মায়ানমারে 'রোহিঙ্গা'- উচ্ছেদ ও গণহত্যার
প্রতিবাদে)
পারফিউম ছড়িয়ে ক্যান্সার সরানো যায় না
কেমো দিয়ে পুড়িয়ে ফেলতে হয়
#
আজকে যাদের রক্তে রাপিড ফায়ার খেলছো
কালকে তারাই তোমার ইনহেলার কেড়ে নেবে
পাল্টি খাওয়া জবানবন্দি মুছে দেবে ইতিহাস
#
গান-পয়েন্টে মুখোশটা খুলে গেছে
মানুষ চিনেছে দুমুখো ভগবান
এরপরও যদি আপোশ করতে হয়
চুপকরে থাকা মরে বেঁচে থাকা নয়?
#
ঘুম ভাঙলেই দেয়ালটা ভেঙে যাবে
স্রোতের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে সময়
#
বুলেট আসলে মৃত্যু কবচ নয়, ঠোঁটে ঠোঁট রেখে
ফাইটার চুম্বন
উপহার
তোমাকে কি উপহার পাঠাই
এ প্রখর দিনে পাখিদের সোহাগ
#
আমার অক্ষর সমস্ত অপেক্ষা ছিঁড়ে
উপলক্ষ খুঁজে নিক
#
আষাঢ়ের প্রথম বৃষ্টি
তুমি দু-হাত বাড়িয়ে ফাঁকা বাসস্টপ
আমার ভাতঘুম বিকেল
#
কিছু প্রতীক্ষা চিরকালীন
গোলাপি পোস্টকার্ড, ভাবলেশহীন এস এম এস
ডায়েরির পাতা জুড়ে অচেনা সংলাপ
#
এসো, অলীক ছুঁয়ে হাজার নীরবতা
পায়ে পায়ে গল্প কুড়িয়ে নিক হাইরাইজ শহরে
#
আমি ফর্মালিন ছাড়াই এক আকাশ ভালোথাকা পাঠালাম
দার্শনিক
কথার ফেঙশুই সমস্ত দরজা খুলে দিয়েছে
বৃষ্টির পিঠে আজও সেই নোনতা উপেক্ষা
#
আত্মজীবনীর পাতায় পাতায় বহিছে আনন্দধারা
আমার কোনও ভূবন নেই
সকালে গরম চা, রাতে ঠান্ডা দুধ
কক্ষচ্যুত ফড়িংয়ের মতো মাঝে মাঝে নিজের
সামনে দাঁড়াই
খুলে দেখি
কতগুলো রক্তহীন সকাল
উদগান্ডুর মতো দার্শনিক হওয়ার চেষ্টা করছে
#
আসলে আমি সেই সাইকেল গ্যারেজের ছেলেটা
যার কোনো নাম নেই
কৈশোর জুড়ে শুধু পাংচার আর কালি
রিয়ালিটি
(...এখনও দগদগে অসম্পূর্ণ কামড়ের দাগ)
বারবার অমলকান্তিরা রোদ্দুর হতে চেয়েছে...
একে ফরটি সেভেন হাতে সীমান্তে দাঁড়ায় যে
জওয়ান সে জানে
সকালের রোদ্দুর কতটা কিমতি হতে পারে।
প্রতিটা নিশ্বাসে সে উপলব্ধি করে বারুদ
না থাকলে
কিভাবে ফুরিয়ে যেতো অক্সিজেন...
#
এটা অহং নয়, আমাদের একটা ছাতিম গাছ ছিল
প্রতি বর্ষায় সিঁড়িভাঙা অঙ্কেরা এলোমেলো
নাটোরের বনলতা সেন
ফ্লেক্সিবিলিটি বাড়তে বাড়তে একসময় কপালের
ভাঁজ বেড়েছে
বর্ণমালার শরীরে জেগে উঠেছে অল্টারনেটিভ
স্তন
না, তোমাকে বিকিনিতে ভাবিনি। ভোঁতা অস্ত্রে
ঘায়েল হয়েছে দুচারটে ইঁদুর
কেবল একটা মানচিত্র, কেবল একটা কাঁটাতার
#
আসলে প্রতিদিন আমরা নিজেকেই ধর্ষণ করি।
রূপকথার গল্প নয়, একটা চাকরি নয়, ঝরঝরে
বাবার পেসমেকার নয়
অমলকান্তিদের ঘুমের ওষুধ দিন...
No comments:
Post a Comment