Friday, December 14, 2018

কবিতা সৌমনা দাশগুপ্ত






প্রেমের কবিতা

কথা তো অনুপান মাত্র
জিভ দাও নির্ঝর প্রদেশে
এ তক্র গোখুরার বিষ জর্জরিত 

তবে সমস্ত সলিচ্যুড ভেঙে নীথর বাদামের থেকে দানাটুকু তুলে নেওয়া, এই যে ছলনা লেখা হল, অথবা কোনো একদিন লেখা হবে ভেবে পাইনের ডালে ডালে আচমকা রোদ ঢেলে দেওয়া, আদতে শিমূল ছিল, ঘোষণায় এইভাবে রঙ দিয়ে তুনে হাওয়াওমে ভাং মিলায়া কিংবা প্রেমের হোলিস্টিক ধারণায় ও আমার রং মিলান্তি খেলার মাঝখানে সে এক পাথরের মুখ, চূড়ান্ত প্রফেট যেন বাসনার সরটুকু মুছে ফেলে আগুনে বসেছে, আর পাথর ফোটার শব্দ, আর পাথর ফোটানোর শব্দে লেখা হচ্ছে সম্মোহনের কিছু মিথ্যে মিথ্যে ছবি


আট ফুট বাই আট ফুটের
এই চোরকুঠুরিতে শীতকালেও
হাওয়া চালিয়ে দিতে হয় দিগন্ত

আর নিঃশ্বাস নেওয়ার আগে ও পরে একটা করে হাইফেন বসিয়ে আমি সিঁড়ির কথা ভাবতে থাকি, পতনজনিত আশংকার কথা ভাবতে থাকি। বিভ্রান্ত এক শকুন আজকাল আমার মাথার ভেতর ঢুকে বসে ডানা ছড়িয়ে দিয়েছে, দিচ্ছেআমি ক্রিস্টালের স্বচ্ছতা দেখে ফেলে ভয় পাচ্ছি আর সলিউবল হয়ে ওঠার আপ্রাণ চেষ্টায় আমার হাত পা থেকে শুরু করে মেরুদণ্ড অবদি ঝনঝন করে ভেঙে পড়ছে, এই আতঙ্ক আমি কোনখানে জমা করব দিগন্ত? কোন টেস্টটিউবের ভেতর নির্ণীত হবে আমার দ্রবীভূত হয়ে যাওয়ার তাপমাত্রা, কোন হ্যালুসিনেশন আমাদের পরাবাস্তবের দিকে নিয়ে যেতে পারে, তার জন্য হন্যে হয়ে আমি খুঁজে বেড়াচ্ছি গাঁজা, হাসিস, এল এস ডির পরবর্তী জেনারেশনের মাদক 

ধোঁয়া শুধু ধোঁয়ার ভেতর এই দিনরাত 
আমার আর আভূমিপ্রণত এই নিশীথিনীর 
পিঠে সওয়ারী হয়ে ওঠা হল না

কবে কোথায় কোনখানে সঠিক তুলোর থেকে উষ্ণতার সন্ধান পাব, সেকথা তুমি কোনোদিন বলে দাওনি দিগন্ত। রডোডেনড্রন নিয়ে অথবা ওয়ার্ম কালারের প্রতি অতিদ্রব হয়ে ওঠার এই ফ্যান্টাসি আমার আর ফুরোবে না। রঙের দিকে যেতে যেতে প্রতিদিন বৃন্দগানের দিকে ঝুঁকে পড়ার এই প্রবণতা, লুব্রিকেশনের দিকে অতিরিক্ত মনোযোগ আমার ক্যানভাসকে আর শুকিয়ে ওঠার সুযোগ দিচ্ছে না। জীবন-গুরাসের মধু জমতে জমতে একদিন চাক ভেঙে ছেতড়ে পড়বে, এই বাস্তু- কুসুমে টোকা দিলেই ছিটকে বেরিয়ে আসছে বাদামি রঙের এক ঘোড়ার কংকাল 

এইখানে গান পেতে দিও
এই সাবুই ঘাসের বনে
তোমার ঘামের গন্ধ লেগে

এক চারণভূমি থেকে আরেক চারণভূমির দিকে যেতে আর কত পা হাঁটতে হবে দিগন্ত! আমি ফসিলের কাছ থেকে শিখে নিয়েছি টিকে থাকবার এক অলৌকিক প্রকরণ। অনবরত চালিয়ে যেতে থাকলে এই হাইড্রলিক প্রেসও একদিন আমাদের দীর্ঘ নিঃশ্বাসের মতো বাসি হয়ে পচে ফুলে ফেঁপে উঠবে। আর প্রাগৈতিহাসিক সেই নিয়ন আলোর হাসি ছড়িয়ে যাবে পূর্বাপর জুড়ে। উঁহু, এভাবে ঢেলো না, স্প্রেড করে যাবে, এ তো ব্লটিংপেপার নয়। এই সারফেস সবাক ছিদ্রে ভরা। আর এই বিবর্ণ ও ন্যাড়া অক্ষরগুলি দিয়ে কতখানি পাতাই বা ভরতে পারে বলো! 



No comments:

Post a Comment

একনজরে

সম্পাদকীয়-র পরিবর্তে

"যাইতে যাইতে যাইতে, কত দেশ, কত পর্বত, কত নদী, কত রাজার রাজ্য ছাড়াইয়া, রাজপুত্র এক বনের মধ্যে দিয়া উপস্থিত হইলেন “দেখিলেন, বনে...

পছন্দের ক্রম