Saturday, December 15, 2018

অরণ্যা সরকার- অন্য আলোর বাতিদান





লালসবুজ বাতি সামলে যখন উজালা চর্চিত চাদর, তখন আহা তৃপ্তি, আহা ধোঁয়া ওঠা পেয়ালা পিরিত ছাড়া কি অন্য কিছু  ?  নাকি একটা ‘অন্য কিছু’র জন্যই স্ব এর দিকে ছুটে  আসা এই জিজ্ঞাসা জ্যামিতি ?  ডোরবেল বাজিয়ে লুকিয়ে পড়ছে খোঁজ অধরা যাপন চেয়ে চেয়ে কে যে টবের মাটিতে পুঁতে রাখে সময়, কে যে হল্লা করে উড়িয়ে দেয় অনিচ্ছের  বাদামি,  জানা হয় না  ভেতরে বসত ওইকয়জনার মধ্যে হয়ত দেখা সাক্ষাৎ হয়, হয়ত বা হয় না কিন্তু তাদের মাথা গুনে উঠতে না পারায় হাঁড়িতে কমুঠো চাল বসাতে হবে তা  বুঝি কি করে ?  তাই অভুক্ত, তাই প্রতিবাদী  ওরা আমাকে ঝাঁকায়, আর উৎসব থেকে ফিরে যাওয়া ঘূর্ণাবর্তে ছুঁড়ে দেয়
এই গোল গোল পাক খাওয়ার ভেতর জড়িয়ে যায় অরূপের ভ্রুণ  নিষেকের গল্প থেকে বেরিয়ে এসে সে ডানা পায়, নীল   নীল কথা পায়  হয়ে ওঠে পরিত্রাণ একটা অন্য কোথাও সঙ্গে নিয়ে ভিটে  আগলে বসে থাকতে থাকতে হয়ত ভুলে  যাই সে সব সঞ্চয়ের কথা বারবার ফিরে আসতে গিয়ে কখনও তাদের কেউ কেউও ফিরে আসে থেকে যায় তাদের নির্জন বসবাস ক্ষতের দেরাজে জমিয়ে রাখে আরোগ্য
ধরা যাক এই আমি এক অন্য আলোর বাতিদান আমির ভেতরেও তো বহুত্ববাদ তাঁর হাত ভর্তি কত বিকল্প রঙিন, মুচমুচে, অরুচিনাশক অন্যশব্দটাও কমন হয়ে গেছে আমার শিরোপার নীচে সরেস মুণ্ডু সমস্ত ফতোয়াকে এপাশ  ওপাশ করে  বেশ একটা শৈল্পিক ঝালর তৈরি করে, মাঝে মাঝে দেখা পাই এর তেষ্টা বিতরণ করছি  আমার পেছনের   জ্যোতিপুঞ্জ  ইশারা পাঠাচ্ছে ইশারায় আদর্শের নুন  মেহেকসুগন্ধকে মুখোমুখি বসিয়ে জোটবুদ্ধিকে শান দিচ্ছি চাঁদে মাটি কেনা এখন একমাত্র ফ্যান্টাসি  
তবু দেখা হচ্ছে এবং চিরদিন কেন নয় ভাবনায় চৈতন্য চুরমার হচ্ছেনা এত কিছুর পরও একটা জোরালো   তবুকিন্তু থেকেই যায়  তাইতো  ছেলেবেলার ভাঁড়ার ঘরেরচুপশব্দটি কখন যেন বুকের মধ্যে লুকিয়ে পড়ে চোখ  পিটপিট করে দেখতে থাকে সমস্ত হৈহৈ   হয়ত এক্ষেত্রে চাওয়াটা চাওয়ার মত হয়েছেতবে ভাবনাটা কিসের?  চাইতে ভুলে যাচ্ছি  বা চাওয়াগুলো চিনতে পারছিনা  ঠিকঠাক।  সমস্যাটা বড় হবার আগে বরং ঝালিয়ে নেওয়া যাক। যাওয়া যাক শুশ্রূষার  দিকে বেঁকে যাওয়া ‘তবু’র কাছে।

সেসব ফসফরাস না শেখা আলো দিন ফোরপ্লে না জানা প্রেম প্রেম জাদু মসলিনে বাস  হুহু দুপুর বাঁশঝাড়, গঞ্জ উপচানো হাওয়া আর কত শাঁকচুন্নি, মামদো বইয়ের পাতায় পাতায় রাজপুত্র, রাজকন্যা ওরাও আমার সঙ্গে বড় হয়  ধীরে ধীরে দূরে যেতে থাকে হাঁউমাউখাঁউ খুব দূর থেকে আসা একটা হাওয়া যেন কত চেনা, অথচ তার মিহি আঁচল  ভর্তি কত অজানা গল্প কালো কুচকুচে খাটের আয়নায় ফুটে উঠতো মনে মনে সাজানো ছবি স্কুলে কোন প্রজেক্ট জমা দিতে হোত না  তাই ছুটির দুপুর মানেই  আয়নার ভেতর ঢুকে পরা আর ছমছম ছায়ার গল্প জুড়ে থাকা নির্জনতার পেট চিরে বেরিয়ে আসা এমন দুপুর এখনও আমার প্রশমন   
            মেধারোদ্দুরে স্মোকি কাবাব হয়ে আছি ঝকঝকে চূড়ায় উড়িয়ে দিচ্ছি শংসাপত্র, ঠিক তখনই ধুলোর ঘূর্ণিতে  আটকে যাওয়া বাঁশপাতারা  নিয়ে যায় সেইসব দুপুরে ছায়া থেকে খসে পরে ছায়ার পরত পাতা খসার শব্দ, ধুলোর  গন্ধ, আর কি পেলব বিশ্বাস  ঘিরে রাখে আমার সন্ত্রাস থেকে আমাকেই উদ্ধার করে তারা  
            ছিল নীল বেগুনি, সাদা সব ঘাসফুল বৃতি, দল, স্তবক, পুং বা গর্ভকেশর নয় তারা ছিল শুধুই ফুল তারপর  কত সূর্যমুখী দিন, কত হাসনুহানা রাত, তবু ওইসব ঘাসফুল মানে এখনও একটা সাইলেন্ট মোড ব্ল্যাকবোর্ডের হৈহৈ থেকে মুছে দেওয়া ভুল অক্ষরেরা যেভাবে বাড়ি ফেরে, দাওয়ায় মাদুর বিছায় সেভাবেই ওরা  ভুলিয়ে রাখে পর্বত  ডিঙনোর  ব্যর্থতা  ফুলগুলো জুড়ে জুড়ে তৈরি হয় আকাশ  খুব নিচু হাতের নাগালে ঢুকে পড়া যায়  ঢুকে পড়লেই মেঘ মেঘ  নিরাময় আর ছিল জোনাক হ্যারিকেন সন্ধ্যেয় ঝিঙ্গে মাচার হলুদ পেরিয়ে  ঝোপের মধ্যে জ্বলজ্বল করতো তখন তারা শধুই অবাক উজ্জ্বল তাদের কোন জীবনবিজ্ঞান ছিলনা পুকুর পারে নেবুর তলে থোকায়  থোকায় জোনাক জ্বলে  পড়তে গেলেই একটা আবিষ্কারের আনন্দ  হত ভেবলে যাওয়া, আহা কি দেখিলামসেই আমি মাঝে মাঝে হেলদোলহীন জীবনে  মশারীর মধ্যে দেখা দেয়  তখন সে যে  কি পরচুলা খোলা আনন্দ উন্মুক্ত চুলকুনির মুক্তাঞ্চল  
কত জ্যোৎস্না তাড়া করে চাঁদের গর্তে ঢুকিয়ে এলাম প্লেনের জানলা দিয়ে আকাশ দেখতে গিয়ে শূন্যের গ্র্যাভিটি   বুঝে নিলাম  সিটবেল্টে সংযমী জীবন বেঁধে কত চাঁদনিভুক  শ্রী তলিয়ে গেল  গল্পে গল্পে মারমেডদের লেডিজ স্পেশালে   তুললাম  তবুও পরি পাওয়া রাত গেলনা আমার সাততলা ফ্ল্যাটের নীল সাদা দেয়াল জুড়ে পরি আঁকা আমার তার   সাথেই ওলো সই, তার সাথেই প্রাণের কথা সে ঘরেও হানা দেয় আবাসনের মিটিং রিপোর্ট, আমি ও আমাদের পতাকার গোপন ফুটো ফাটা   পরির হাত থেকে তারা খসে পড়ে  চোখের মনিতে জমে  ফোড়ন গন্ধ গুমোট, গুমোট সব    মৃত্যুর আগে যতগুলো মৃত্যু  সংরক্ষিত থাকে , তাদের ছুঁতে ছুঁতে দু একটা কাশ সিরিজ, শিউলি উঠোন, বা ত্রিনয়ন উঠে দাঁড়ায়
ইরান থেকে আসা মেয়ে থাইল্যান্ডে কি যে ঘোর পায়  বড় টিপ পরাইন্ডিয়ান বিউটিধরে রাখে সেলফিতে  নাম জানা হয়নি অন্তত একটা টিপ উপহার দেওয়া হয়নি শধু আমার মধ্যে থেকে গেল সে হয়ত ওর মধ্যে খানিকটা আমিও   ওর নীল চোখে সেদিন ঘাসফুল, জোনাকি, দুপুরের বাঁশবাগান থেমে ছিল বাড়ি ফিরে  দেয়ালের পরির কাছে যেতেই দেখি সে মিটিমিটি হাসছে ওর মুখে ফুটে উঠছে ইরানি বালিকা  
আমাদের নয় দরজার চাবি, সদর কোঠার খোজখবর সবই বোতাম খোলা-বন্ধের মধ্যে বেঁচেবর্তে থাকে আয়নামহলেই শুধু চলে ছদ্মবেশ আর লুকোচুরি খেলা ঢেকে ঢুকে রাখার মত এত শাক পাই কোথায় ? তাই মহল বদলাই  এত যে বদল তবু তো  বাসরঘরে সাপ যে রূপ, কথা হয়ে যায় তারা সব নেমে যায় আমারই প্রস্তুত করা পাঁকে   পূর্ণচ্ছেদ থেকে পালাতে পালাতে ক্রমশ ঝাপসা হতে থাকে কল্পনা  তবে আর আত্মরতিতে নেই কল্পনারা স্কিমের খাঁজে খোঁজে সেক্সটয়দের রমরমা বাজার একঘেয়েমি থেকে মুক্তি প্রচেষ্টায় মিলায় বস্তু, কল্পনায় বহুদূর তাই শর্টকাট রুটেরা   জিতে যায়  অতএব কল্পনারা  গর্ভপাত করাতে করাতে অ্যানিমিক  কুলেখাড়ার সাজে কত যে ইস্কুল আহা শেখো, জীবন  মানে ঠিক কি কি সকালের হাতে ধরিয়ে দাও ঠিকঠাক ওয়ার্ক অর্ডার  দুয়ো দিচ্ছ ? বেশ তো বোঝ বাবা  জীবন মানে ঠিক কতটা জি বাংলা  আসলে  কর্মবিমুখ আসলে পালিয়ে বাঁচা -এইসব আত্মবীক্ষণ  যখন  অস্ত্র শানায়, দামামায়  জেগে ওঠে যুদ্ধ জীবাশ্ম আবারও তখন  হ্যাঁ তখন নিজস্ব নিরাময়ের কাছেই ফিরে আসা সব শুরুর শেষে, বা শেষের  শুরুতে একটাই প্রচেষ্টা থেকে যায়  প্রতিদিনের সমস্ত মৃত্যুরাও যেন ঈর্ষনীয় হয়ে ওঠে  তাই তো এক যে ছিলর দেশ    নদীমুখো ধুধু দিন মচকানো শর্টফিল্ম থেকে মায়া হরিণ ছুটিয়ে বেড়ায় পূর্ণদৈর্ঘ্যে যাবার জন্য ব্যাকুল আমার সিঁড়ি অঙ্ক,   আমার কিছু হল না দিন যত ক্ষেপে ওঠে, তত এগিয়ে যাই সেইসব নির্জন মুখরতার দিকে সে এক বোকাসোকা অ্যান্টাসিড  বুকজ্বালা ও চোঁয়া ঢেঁকুরে মায়া স্পর্শ রেখে আকাশের গায়ে দূরের গ্রাম দাগের মত সে কেমন ডাক দিয়ে যায়
তা বেশ করে  সে যদি ধরাই দেবে তবে কি থাকে আর ?  সে আছে বলেই তো  ভাত ফোটাই, চাঁদমুখ করে  বেড়ে দিই আর  সরিয়ে রাখি দু এক দানা ব্যর্থতা ঝাঁপি ভরে ওঠে  ফলবতী অন্ধকার টেনে নেয় সেইসব আগুন বরফ  বীজ অক্ষরে নির্মাণ রাখি অক্ষরে ফুটে ওঠে পথ ফুরিয়ে যাওয়া স্বপ্নদের নতুন ইশারা  ভুল বানানের চিঠি আরএকটা গোল্লা পাওয়া খাতা  হাতে বেশ আছি  ভাতে,  বিলাপে, ধাক্কা ও ঠোক্করে মাখিয়ে নিচ্ছি পরিবসতের ফিসফাস অকর্মক ক্রিয়ার ভেতর শিষ দিচ্ছে ইচ্ছেপ্রবণ গলি  বড় প্রিয় এই লাস্টবেঞ্চ আশনাই-------


No comments:

Post a Comment

একনজরে

সম্পাদকীয়-র পরিবর্তে

"যাইতে যাইতে যাইতে, কত দেশ, কত পর্বত, কত নদী, কত রাজার রাজ্য ছাড়াইয়া, রাজপুত্র এক বনের মধ্যে দিয়া উপস্থিত হইলেন “দেখিলেন, বনে...

পছন্দের ক্রম