Friday, December 14, 2018

কবিতা- মাসুদ বড়া





সিট বেল্ট ও তুমি


স্বচ্ছন্দে বেঁধে ফেলো সিট বেল্ট
রাস্তার গিঁটে গিঁটে চাপা রক্ত
হোঁচট খাওয়ার ভয়।
তোমাকে বিচলিত হতে হবে না,
তবুও বেঁধে ফেলো সিট বেল্ট
যার অভ্যেস ছিল অপারেশন থিয়েটারের
লাল আলোর মুখাপেক্ষী আত্মিক প্রার্থনার মতো।
আজ তার চটা জামায় লেগে আছে
বয়সের উগ্রতা,বাজে ছেলের ব্যাচ।
তোমার সমস্ত দায় ফুরিয়েছে
তুমি বুকের বাম দিকে হাত না রেখেও
নিজেকে মৃত দাবি করতে পারো।
তবুও তুমি বেঁধে ফেলো সিট বেল্ট
রাস্তার বাঁক বেয়ে কবিতায় আঁচড় এড়ানোর জন্য
ওটাই তোমার শেষ সম্বল, "মৃত" শব্দের আয়ু।



যোগ্যতা

দাঁড়ি, কমার পরেও যদি শ্বাসবায়ু না থামে
যদি ঘন ঘন শ্বাসকষ্ট হয়
একটু শান্ত হয়ে বসো,
নিজের প্রতিবিম্বের মুখোমুখি হও,
যে মরীচিকার স্বপ্নে রাত কেটেছিল তোমার
তার বিপরীতে এক সমুদ্র দাঁড়িয়ে আছে।
সে তোমাকে চেনে না আমাকে চেনে না
শুধু চেনে ঢেউ এর তীব্রতা, লবণের স্বাদ,
একটু একটু করে মিশে যাবে তুমিও
যদি বিশ্বাস রাখো নিজের অস্তিত্বে,
আবারও প্রতিবিম্বের মুখোমুখি হও
প্রশ্ন চিহ্নের আগে শ্বাসবায়ু থেমে গেলে
জেনে রেখো "যোগ্যতা"র বেঁড়াজাল ভেঙে গেছে।



একটা ঢেউয়ের মতো


পরিযায়ী পাখির পালক
কখনও কখনও জলে ভেসে ওঠে,
ঢেউয়ের মতো উপছে পরে অদম্য উন্মত্ততা,
বালির উপর দাগ কাটা নামের হদিশ
খুঁজতে খুঁজতে..
জোয়ার এসে যায়।
স্রোতের অনুকূলে এভাবেই কাটিয়ে ফেলি
কয়েকটা স্মৃতির বছর।


আকর্ষণ


এভাবেই বেড়ে চলে একটা দিনের মধ্যে কয়েকশো রাত
বৃত্তের বাইরে বেরিয়ে আসতে পারি না।
জানি জলের উপর কোনো যতিচিহ্ন
স্থায়ী নয়,তবুও একরাশ কল্পনাযাপন।


অবশেষে নিচু হয়ে বসে আছি
ঘন ঘন দীর্ঘশ্বাস পড়ছে,
মায়ার মতো জাপটে ধরেছে কৌতূহল, জিজ্ঞাসা,ফাঁকা ব্ল্যাকবোর্ড।


প্রতিবিম্বের মুখোমুখি


চশমার ফাঁক দিয়ে জোনাকি স্মৃতিচারণের প্রচ্ছদে
আবছাময় দুরন্তপনার ছিটেফোঁটা এখনও নাবালক।
খোঁচা খোঁচা দাঁড়ির গভীরতা গাঢ় হতেই,
চিন্তা শিকড়ে নন ডিগ্রেডেবেল পলিথিন এর
কৃত্রিমতা কেড়ে নিয়েছে হাসি।
অভিনয়ের নৈকট্য গিলে খাওয়া বয়সের পাতে
উচ্ছিষ্ট কিছু সত্যের ভাঙা হাড়, কয়েকটা কলিজার টুকরো।
আমি শাকাহারী ছিলাম,
সোঁদা মাটির গন্ধ আঁকড়ে ধরতো পা,
আজ চিকচিক মাংসের দলা দেখে লালা ঝরে।
উষ্ণতার দাঁত অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে,
আয়নায় নিজেকে প্রায় দেখার চেষ্টা করি,
চোখের কোলে জমে ওঠা কালো দাগের ইতিহাসে
আটকে থাকে আমি আর প্রতিবিম্বের ব্যবধান।










No comments:

Post a Comment

একনজরে

সম্পাদকীয়-র পরিবর্তে

"যাইতে যাইতে যাইতে, কত দেশ, কত পর্বত, কত নদী, কত রাজার রাজ্য ছাড়াইয়া, রাজপুত্র এক বনের মধ্যে দিয়া উপস্থিত হইলেন “দেখিলেন, বনে...

পছন্দের ক্রম