Saturday, December 15, 2018

একগুচ্ছ কবিতা উৎপল চক্রবর্তী





১.
অপলাপ

ভাড়াটিয়া নই আমি,
নই কোনও পরিযায়ী পাখি
তবু প্রসাধন ঘিরে
আমি কারাগার পুষে রাখি।
২.
দরবারী 

একদিন সব ঝরে যায়
সব ঢলে পড়ে জলে।
জল থেকে ঝুরি নেমে
লেগে থাকে দেওয়ালে।

৩.
দাগ
প্রসাধন তোলে দেখি
শুধু চাদরের কালো
হৃদয়ের দাগ রেখে
সব কোম্পানি পালাল।
৪.

জারজ

যে উপত্যকা শুধুই
একমুখী টেরেস,  চা বাগান।
সেখানে কবিতা লেখে
সাহিত্যের জারজ সন্তান।

৫.
আলাপ

কথায় কথায় কথা আসে।
সূচী থেকে একে একে
পাতাদের খুলে  রাখে
আগুন পিপাসার মাঝখানে।






৬.
প্রতিঘাত

আঘাত তো ভোগবিলাসী এক 
অবেলা, অন্ধপ্রেমিক।
প্রতিঘাতহীন তুমিও কি
নও একটুও অমানবিক?

৭.

ফাটল

নিখাদ ফাটোল শুধু
সত্য হয় মন্দিরে মন্দিরে।
একটু আধটু আলো 
ঢোকার আগেই
বলি হয় পুজোর সময়।

৮.
জ্যান্ত শব

সারাদিন আমি বসে থাকি
আমার উপর জ্যান্ত শব।
হাত নাড়া কথা বলা বন্ধ
আমারই নামে উৎসব।

৯.
একহাঁটু ঘাস

বুকে আমার একহাঁটু ঘাস
তবু আমি জেগে আছি।
শুয়ে শুয়ে দেখছি আকাশ
আর সমুদ্রের উদ্দাম  উচ্ছ্বাস।

১০.
ভয়

রাত যত বাড়ে..
মনে হয়, জেগে থাকি...
জেগে থাকি আরও..
ভয় হয় বড়
বড় ভয় হয়, যদি
ঘুম ভেঙ্গে 
জেগে না উঠি একবারও!

১১.
যাওয়া আসা

যাব বললে যেতে হবে?

নাকি  যাওয়া যায়?
যেতে  যেতে ফিরে আসা?

সেও কি ভালো দেখায়?
তবু যে অজস্র যাওয়া,
শুধু যাওয়া চাই।


 ১২.
আলো

যত ঝরে ঝরে যায় পাতা
হরিনের ডানা থেকে 
খসে খসে পড়ে
মেঘ, রামধনু
অনন্ত বৃক্ষের 
কোটরে কোটরে
জমে জন্ম,নির্ভার বিস্মৃতি।

১৩.
মুক্তি

যা না আরও দূরে চলে...
ঝরতে দে পাথর, কিছু মেঘ  সীসা 
হরিন ডানার চরাচর থেকে।

১৪.
সংগ্রাম

এত পাথর ছোঁড় কেন?
ভাঙতে দাও তাকে,গলতে দাও একা।
কুয়াশার হিজাব খুলে 
নিজেকে নিজে বলো,
'Say not the struggle not availeth'.






১৫.
ফসল

দৃষ্টি যখন সৃজনমুখী
হাতের কাছে প্রসব সুখ।
কষ্ট তখন সৃষ্টি ছাড়া
কেবল তা সে জয়ের মুখ।

১৬.
এপিফ্যানি

পুড়েছি আমি অক্ষত 
ঠিক যতবার,
তোমার মতোই কেউ
জন্মেছে  আবার।
যেই সে শাঁখের বাতাস
এসেছে এপারে,
দেরি করিনি টিলার
কিনারে দাঁড়াতে।





No comments:

Post a Comment

একনজরে

সম্পাদকীয়-র পরিবর্তে

"যাইতে যাইতে যাইতে, কত দেশ, কত পর্বত, কত নদী, কত রাজার রাজ্য ছাড়াইয়া, রাজপুত্র এক বনের মধ্যে দিয়া উপস্থিত হইলেন “দেখিলেন, বনে...

পছন্দের ক্রম