Friday, December 14, 2018

কবিতা -পম্পা দেব







কবিতা এক 

আহা জন্ম , ওহো ভালবাসা
 
শস্যক্ষেত, গোধূলিবিকেল
ধীর পায়ে
  লোকালয় ভাষা ।
অকৃপণ
  সে দান , বিস্মিত  
সংযোগ,
  স্রোতের ভেতর 
স্রোত , গানের পরিধি জানি
 
চিরপ্রণম্য হে,
  বরাভয়
মুদ্রা, অখণ্ড , অগ্নি ও বাণী ।
আহা জন্ম, ওহো আয়ু , নীড়
সন্ধানী প্রাণ, ওষধি , সেবা
প্রসাধনী, সুগন্ধ, অতীত
জারিত
  শ্লোক, জন্ম জন্ম 
হে অন্ন হে শুচি হে শুশ্রূষা
 
হে অসিম অপূর্ব অপার

কবিতা দুই

সব পথই ফেরার ,
সব জলই হাঁসেদের ঘরবাড়ি
 
যেভাবে নৌকো আর খেয়াঘাট,
 
যেভাবে ভাষা আর সঙ্গীত
  , 
হাত ধরাধরি করে!
 
কথায় কথায় পার হয়ে যাওয়া রাত,
নীহারিকা ,উল্কাপাত
  খসে পড়া তারার
চকিতে প্রার্থনা ,
 
পুনরায় পুরনো পথের পাশে শান্ত অপেক্ষা,
 
ঢিল বাঁধা মানতের মতো ,
 
দেবতার পায়ে লাল ফুল,
রক্তচন্দন , সুগন্ধী, শালু ,
 
সন্ন্যাসী অথবা পীর,
 
জন্নত অথবা জাহান্নাম ,
 
বেদনার অতিক্রান্ত মুঠোহাত
 
ছুঁয়ে ছুঁয়ে থাকা শ্রাবণ,
 
'আমি তোমার সঙ্গে বেঁধেছি আমার প্রাণ '
শস্যক্ষেত, তরুণ -তরুণী আলোর
 
সংকেত , স্মিত হাত আর পোহানো আগুন
 
উৎসব দিন , ঝলমলে রোদ,
আলোকবর্ষ , লবণের ঋণ
 
জীবনের গান, গাছজন্মের
 
জীবন সমান , আঁধার পেরিয়ে, দিগন্তভোর
সব পথই ফেরার,
 
সব ছাদই তোমার আমার
 
যেভাবে
  অরণ্য  আর ছায়া 
মায়া আর ভালবাসাবাসি
পাশাপাশি চলে!


কবিতা তিন

হে জীবন হে অভ্যেস, এসো , 
এসো এসো হে সন্ধ্যা সঙ্গীত
 
হে দ্রুত, হে বিলম্বিত এসো,
 
এসো অনির্বাণ হে অহর্নিশ।
হে বিপন্ন প্রজাপতি ভোর
 
হে , প্রলাপ, বিষাদ সিন্ধু হে
সঙ্কট , হে দিগন্তচিল, ঘোর
হে , বিলাপ,
  প্রার্থনা  হে।
এসো স্থিতধী হে আশ্চর্য
 
খেলাঘর হে ,রাত্রি পারাপার
 
ভ্রমণ কাহিনী, এসো ভাস্বর
 
কোমলকান্তি , হে ঈশ্বর ।
যাও হে মৃত্যু, যাও হে দ্বন্দ্ব
 
যাও হিম , যাও তুমুল তর্ক
 
যাবতীয় ,যাক বিপ্রতীপের
 
আড়ালে যাক হে ছন্দ পতন
ভেঙে যাওয়া হাল , যাক ভুল
যাক ছিন্ন গন্ধ, ছায়াজন্মের
 
গল্পের মতো, পুরনো আয়ুর
প্রাচীন শরীরে,
  যে সুর টানে
ভাসছে আলো, অন্নপূর্ণা
 
ভাসছে জগৎ ঘন ঘুম-ঘোর
 
স্বপ্ন গভীরে
  হিম জ্যোৎস্নার 
গভীরতা প্রিয় যত শব্দ -
সরল সহজ রাস্তার পাশে
কার ধুলিছাপ সূর্য মুখর
আর মধুমন , বড় ভালবাসে
জন্ম জন্ম আয়ু প্রান্তর-
নমো ধীর নমো ,নম চন্ঞ্চল,
নমো হে চক্ষু, নমো প্রতীক্ষা
 
নমো হে হৃদয়, নমো হে সজল ।
চরণচিহ্ন ,নমো বরাভয় ।

কবিতা চার

অসুখদিন তোমার'ই নাম পার্কস্ট্রীট ।
বুড়ির চুল সাজবে যার
  সহজ পথ,
যেখানটায় মাতবে খুব
  শহর-দিন ।
অসুখদিন তোমার নাম 'যীশু দিবস'।

অবান্তর কথার জাল বুনছে রাত
 
তুলছে ঢেউ
  কোথায় ঐ দূরের গান 
শীতের দিন পাতার ঝড় শূন্য গাছ
অসুখদিন তোমার নাম 'অকস্মাৎ'-

তারার ঘর অনেক দূর আকাশপথ
ভাঙছে বুক নিঃস্ব স্বর ডাকছে নাম
দুঃখী প্রাণ বাঁধছে ফের অতঃপর -
অসুখদিন আজ তোমায় ছুটি দিলাম।

কমলারঙ শীত দুপুর মনখারাপ
 
একলা পথ ধরছে হাত ছু-মন্তর
সান্টাক্লজ হাসছে ওই দুঃখ দূর
অসুখদিন যাও দেখি
  তেপান্তর

ওষুধময় রাত্রিদিন আরোগ্যের
 
মুক্তি কোন দূর সুদূর আকাশদীপ
নিবছে , প্রাণ যায় ভেসে তবুও সেই
জানো কি না 'মেধা' রঙের মৃত্যু নেই ।

কবিতা পাঁচ

গুপ্তধন চাইনা শুধু পুনর্জন্ম চাই। 
আগুন এবং
  লবণের মাঝে 
জেগে থাকা হলুদ ফাল্গুন
 
পাহাড় চূড়ার পাকদণ্ডী রাস্তায়
 
অপ্রচলিত গানের সুর, বহুদূর
 
হাসি ছড়ানো জলপাই বিকেল ,
 
কুড়িয়ে পাওয়া মনিমুক্ত চাই ।

এখনো মাঝে মাঝেই হঠাত
 
চলকে ওঠা রেডিও স্টেশন
 
উঁকি দিচ্ছে আনাচ কানাচ,
জানান দিচ্ছে হারিয়ে যাওয়া
 
দিনের মতো, চিরতরুণ রঙের
 
চিঠি, আকাশ প্রদীপ, জন্ম
 
তারিখ মনে পড়ার
  প্রিয়- তিথি।
উৎসব রাত বাজি পোড়া
হাওয়ার পাক,
  কখন যেন 
লাফিয়ে উঠলো দিগন্ত দিক ,
 
সেসব মেঘ সেসব বৃষ্টি
আকস্মিক, যেখানে যাক জাহান্নামে ,
 
চাইনা আর। চাইনা আর ।
ফুরিয়ে যাওয়া গানের দিন
 
আবার ঢেউ । জাগবে প্রাণ
বন্ধ ঘর , খুলবে তার
পুনর্জন্ম চাই শুধু । গুপ্তধন
 
চাইনা আর । চাইনা আর ।


                             


No comments:

Post a Comment

একনজরে

সম্পাদকীয়-র পরিবর্তে

"যাইতে যাইতে যাইতে, কত দেশ, কত পর্বত, কত নদী, কত রাজার রাজ্য ছাড়াইয়া, রাজপুত্র এক বনের মধ্যে দিয়া উপস্থিত হইলেন “দেখিলেন, বনে...

পছন্দের ক্রম