Friday, December 14, 2018

কবিতা- অরুণাভ রাহারায়




স্নিজা কাব্য


তোমাকে প্রথম দেখি অফিসে
শীতকাল জুড়ে খুব কফি খেয়ে
বিজয়কে ডেকেছিলে জোড়াল

নিচু মুখে আমি যাই বাইরে
রবি ঠাকুরের গান গাই রে
তোমার গলার স্বর ধারালো

তোমার মুখের দিকে তাকালে
নরম আলোর রেখা বাঁ গালে
চুলে কিছু এলোমেলো ঝোপঝাড়

ও মুখ দেখিনি আগে কখনও
শুনিনি অমন নাম কখনও
মনে রোদ পড়ে গেল তেড়ছা

তোমার পিসির গান শুনেছি
বাড়ি ফিরে কবিতায় লিখেছি
হঠাৎ তোমার দেখা! কান্ড!

মধু ঝরে পড়ে যায় কণ্ঠে
হেঁটে হেঁটে যাব নাকি ও ঠোঁটে?
জমে যায় কবিতার ভাণ্ড

অফিসে প্রচুর কথা বলি না
মেয়ে দেখলেই প্রেমে গলি না
তবুও পড়েছি প্রেমে কেন যে!

তুমি চলে গেলে তাই খুব চাপ
এই অফিসে খাচ্ছে না খাপ
সব কথা গেঁথে আছে মগজে

এই পথ উচুনিচু, গাড্ডা--
প্রতিমাসে কবিতার আড্ডা
তোমাকে যে ডেকে আনি সহজে!

তুমি এসে কি দারুণ গান গাও
বই-চারাগাছ উপহার পাও
রবি ঠাকুরের গানে ম-ম ঘর

চলো যাই তুলে দিই অটোতে
ফেসবুক খুলে দেখি ফটোতে
কানে শুধু ভেসেছে গলার স্বর

বাড়ি ফিরে পৌঁছনো সংবাদ
যেই দাও সামনেই দেখি খাদ
স্লিপ খেয়ে পড়ে যাই নিমেষে

পড়ে গেলে কী যে হয় জানো কি?
ঠাকুর বা ভগবান মানো কি?
চলো যাই দু'জনেই প্যারিসে!


আবার কবে যে দেখা-- জানি না!
আজ থেকে ভগবান মানি না
একা একা চলে যাই মানালি

হঠাৎ মেসেজ আসে তোমারই
সব অন্ধের নাম হোমার-ই
খাতা খুলে লিখে চলি কবিতা

এই পাহাড়ের ঢালে জমে মেঘ
আপেলের দেশে দেশে কী আবেগ
এসে যায় নতুনই এপিসোড

সিমলা মানালি হয়ে খাজিয়ার
তোমাকে পথের ধারে খুঁজি আর
এসেছে কুয়াশা-ডলহৌসি

গোল্ডেন টেম্পেলে ঢুকেছি
ওড়না জড়ানো মুখ দেখেছি
এত দূরে তুমি এলে কীকরে?


দেখা হবে হবে তবু হয় না
দেখা না দিলে যে লেখা হয় না
অতএব বলে দাও-- কী করি?

এ কথা শুনে কি তুমি লেখা দাও?
হঠাৎ কি তাই তুমি দেখা দাও?
কোন অভ্যেসে আঁকড়ে ধরি?

তারপর চলে যাও দূরেতে
'আমি শুধু বাঁশরিরো সুরেতে'
জেগে থাকি সারারাত ঘুম নেই।

No comments:

Post a Comment

একনজরে

সম্পাদকীয়-র পরিবর্তে

"যাইতে যাইতে যাইতে, কত দেশ, কত পর্বত, কত নদী, কত রাজার রাজ্য ছাড়াইয়া, রাজপুত্র এক বনের মধ্যে দিয়া উপস্থিত হইলেন “দেখিলেন, বনে...

পছন্দের ক্রম